ঢাকা , শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন বিভাগের হয়রানি মুলক মামলায় কৃষক দিশেহারা  


আপডেট সময় : ২০২৫-০২-২০ ১৫:৩৯:০৪
বন বিভাগের হয়রানি মুলক মামলায় কৃষক দিশেহারা   বন বিভাগের হয়রানি মুলক মামলায় কৃষক দিশেহারা  
 
 
বিশেষ প্রতিনিধি 
 
  দিনাজপুরের  পার্বতীপুর উপজেলার ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের গুড়গুড়ি নামক পল্লীতে জজ  আদালতের রায় প্রাপ্ত জমিতে কৃষকের বসতবাড়ি নির্মান কাজে মধ্যপাড়া বন বিভাগের বাঁধা উপেক্ষা করায় ঐ  পরিবারের সদস্যদের একাধিক বন মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।পরিবার টি   বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত  থাকার কারণে আওয়ামী লীগ দলীয় রোষানলে পড়ে হয়রানি  মুলক মিথ্যা মামলায় কৃষক আশরাফ আলী তিন পুত্রকে আসামি করা হয়েছে এবং দুজন জেল হাজতে  আছে।  যথাযথ দালিলিক কাগজ পত্র থাকা সত্বেও অবৈধভাবে বন বিভাগের জমি দাবি  মামলায় আদালত থেকে কৃষক আশরাফ আলীর পক্ষে রায় প্রাপ্তীর পরে ও  নানাভাবে হয়রানি করেছেন একটি  চিহ্নিত মহল।  
 
জজ  আদালতের রায় প্রাপ্তীর পর গত ২ জানুয়ারি  জমিতে বসতবাড়ি তৈরী কালীন সময়ে প্রতিবেশী আওয়ামী লীগের দোসরদের ইন্ধনে মধ্যপাড়া বিট অফিসার মোঃ মোশারফ হোসেন আশরাফ আলীর কাজে বাঁধা দেন এসময়  আদালত কর্তক রায় প্রাপ্তীর বিষয় টি  তাকে জানানো হলে তিনি  চল্লিশ হাজার টাকা দাবি করেন অন্যথায় নির্মান কাজ বন্ধ করে দিবেন এবং বিভিন্ন বন মামলায় তাকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের  সম্পৃক্ত করার হুমকি দেন। বিষয় টি জানাজানি হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে  সংশ্লিষ্ট বিট ও রেঞ্জ অফিসার কে দিনাজপুর বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে  দ্রুত প্রশাসনিক বদলী করা হয় । 
 
বদলী হওয়ার সময় বিট অফিসার মোশাররফ হোসেন প্রতিহিংশা পরায়ন হয়ে আশরাফ আলীর ছেলে মোঃ ইব্রাহিম আলী ও ইয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে মোকদ্দমা নং ২৩/ মপা ৬/ মবি দাখিল করেন,  ইয়াকুব আলী  নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী । সরেজমিন জানা গেছে  ২০০২ সালে আশরাফ আলী লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার  সীমান্তবর্তী দহগ্রাম ছিটমহল থেকে স্বপরিবারে পার্বতীপুর উপজেলার গুড়গুড়ি মাদ্রাসার ডাঙ্গায় একখন্ড জমি কিনে বসতবাড়ি গড়ে তোলেন। 
 
অনেক কষ্টে জমানো টাকা দিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ জমি কিনেন যাহা  গুড়গুড়ি মৌজার দাগ নং ৭৯৫,৭৯৬ এস,এ খতিয়ান ১২৫/১৩৪ সিএস ১২২ জমির পরিমাণ ৫০ শতাংশ জমির মুল মালিক ছিলেন ছমির উদ্দিন ও আমির উদ্দিন নামে দুই জোতদার। তাঁরা জমি ভোগদখল কালিন সিএস ১২২ খতিয়ানে আমির উদ্দিন এবং এস,এ খতিয়ানে ১২৫/১৩৪ ছমির উদ্দিন নামে চুড়ান্ত ভাবে রেকর্ড প্রকাশিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় করিম উদ্দিনের একমাত্র নাতি ফয়জার রহমানের নামে ২৬/০৫/১৯৮০ইং তারিখে ৭৩৫৪ নং দলিল রেজিষ্ট্রি হয়।  এর পর থেকে ফয়জার রহমান উক্ত সম্পত্তি হালসন খাজনাদি প্রদান পূর্বক ১০/১১/২০০২ ইং তারিখে ৮৮৩২ নং রেজিঃ দলিল মুলে আশরাফ আলী মালিকানা লাভ করেন। 
 
হঠাৎ করে জরিপ চলাকালীন সময়ে ঐ সম্পত্তি বনবিভাগের তালিকা ভুক্ত  বলে বন বিভাগ দাবি করে তবে সপক্ষে কাগজপত্র প্রদর্শনে ব্যার্থ হয়। জটিলতা নিরসনে জমির মালিক আশরাফ আলী দিনাজপুর সহকারী জজ আদালতে ১৫১/০৮ অন্য মামলা করেন। দীর্ঘ ১৬ বৎসর মামলা চলমান  শেষে গত ২৫/০৯/২০২৪ ইং তারিখে যুবায়ের রশীদ সহকারী জজ  পার্বতীপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত দিনাজপুর কর্তৃক আশরাফ আলীর পক্ষে রায় ঘোষিত হয়েছে।
 
এদিকে  আদালত থেকে রায় পাওয়ার পরে বসত বাড়ি নির্মানে মধ্যপাড়া বন বিভাগের  বাঁধা উপেক্ষা করে কাজ চলমান রাখায় গত ১০/০১/২৫ আশরাফ আলীর ছেলে মোঃ ইব্রাহিম  কে আসামি করে গাছ কাটা এবং জমি জবরদখল জনিত বন মামলা দায়ের করেন মধ্যপাড়া বিট অফিসার মোশাররফ হোসেন যার মামলা নং সিআর ০৬/২৫ ( পার্বতী)। শুধু তাই নয়  গত ০৭/০২/২৫ ইং তারিখে আবারো  আশরাফ আলীর তিন ছেলে যথাক্রমে মোঃ ইব্রাহিম আলী মোঃ বাবর আলী এবং মোঃ ইয়াকুব আলী কে পার্বতীপুর মডেল থানার  মামলা নং ১১ তারিখ ০৭/০২/২৫ইং এর ৫,৬,৭ নং আসামি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ২১ এপ্রিল তৎকালীন রেঞ্জ অফিসার খন্দকার মকছেদ আলীর নেতৃত্বে কতিপয় ভাড়াটিয়া হামলা কারীরা আশরাফ আলীর নার্সারি এবং বসত বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালিয়ে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল ক্ষতি সাধন করেছিল।
 
প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে কৌশলে বন বিভাগের তেলেসমাতি মামলা সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
 
এ বিষয়ে মধ্যপাড়া বিট অফিসার মোশাররফ হোসেন জানান আদালতের রায় আশরাফ আলীর পক্ষে হওয়ার বিষয় টি জানার পর আমরা আর বাঁধা দেইনি তবে হয়রানি মুলক মামলায় জড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন আমি বদলি হয়ে অন্যত্র এসেছি তাই কিছু বলতে পারছি না। বর্তমান বিট অফিসার আব্দুল মোতালেব জানান আমি নতুন যোগদান করেছি।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান মধ্যপাড়া বন বিভাগের বিট অফিসার মোশাররফ হোসেন নিজেই গাছ চুরি সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে বাগান হরিলুট করেছে তারই ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রকৃত গাছ চোর সংঘবদ্ধ দল এবং  বন বিভাগের ভূমি দখল কারিদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না মামলা হয় শুধু নিরপরাধ সাধারণ মানুষের নামে। 
 
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ